ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

নির্বাচনী প্রতিহিংসার বিভৎস রূপ: চকরিয়া-পেকুয়ায় ১৩ মামলায় সহস্রাধিক আসামী, হামলা-ভাংচুর চলছেই -হাসিনা আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::

কক্সবাজারের বৃহত্তর উপজেলা চকরিয়া ও উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়া নিয়ে গড়া কক্সবাজার-০১ সংসদীয় আসনে এখন চলছে সরকারি দল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসনির্ভর নির্বাচনী তান্ডব। প্রধান বিরোধী প্রতিপক্ষ বিএনপিকে ঠেকাতে তারা হামলা আর মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির পথকেই নির্বাচনে জেতার প্রধান অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছে। নিজেরাই নিজেদের নির্বাচনী কার্যালয়ে আগুন দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করছে। পুলিশ তাদের সহযোগী হয়ে সেই মামলা গ্রহণ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে অতিউৎসাহী হয়ে কাজ করছে। এমনকি পেকুয়া উপজেলা সদরে একজন পাগলকে গ্রেপ্তার করে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলার নাটক সাজিয়ে নির্বাচনী প্রতিহিংসার নিকৃষ্টতম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে পেকুয়া আওয়ামী লীগ ও পেকুয়া থানা পুলিশ।

উল্টোদিকে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা সংঘটিত হামলা ও সাজানো অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশ ও অন্য আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে প্রতিকার চেয়েও পাচ্ছে না বিএনপি। আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের হামলার শিকার হয়ে চকরিয়া পৌর বিএনপি সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দারের আহত হওয়ার ঘটনাসহ বেশ কয়েকটি ঘটনায় মামলা নিয়ে থানায় গেলেও পুলিশ সে সব মামলার আর্জি ফিরিয়ে দিয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় এক হাজারেরও বেশি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হাসিনা আহমদ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মতে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার মানুষ ‘নির্বাচনী প্রতিহিংসা’র বিভৎস রূপ দেখছেন।

কক্সবাজার-০১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট হাসিনা আহমদ এবং চকরিয়া ও পেকুয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা এমন সব অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি, রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট সকলপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না তারা।

বিএনপির দাবি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার প্রায় সবক’টি ইউনিয়নেই আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ও ক্যাডারদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপিকে ফাঁসাতে নিজেরাই নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাংচুর ও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে একাধিকবার। সাজানো এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ৯টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় চকরিয়া-পেকুয়ার যে সকল বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী নির্বাচনী মাঠে ভূমিকা রাখতে পারেন এমন প্রায় সকল নেতা-কর্মীকেই আসামি করা হয়েছে। মামলা আসামি সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়াও নির্বিচারে চলছে পুলিশী গ্রেপ্তার কর্মকান্ড।

বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, মামলায় আসামি থাকুক বা না থাকুক বিএনপি নেতা-কর্মীরা পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের ভয়ে রাতে বাড়িতে থাকতে পারছেন না। আওয়ামী লীগ ক্যাডারদের সহায়তা নিয়ে পুলিশ প্রতি রাতেই বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

চকরিয়া-পেকুয়ার নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের তান্ডবের ঘটনা পরম্পরা নিচে তুলে ধরা হলো। উপজেলাওয়ারি এই ঘটনাক্রম তুলে ধরা হলো।

চকরিয়া উপজেলা :

নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার একদিন পর চকরিয়ায় বিএনপি প্রার্থী হাসিনা আহমদের নির্বাচনী কর্মীদের উপর প্রথম সহিংসতা শুরু করে আওয়ামী লীগ। ১২ ডিসেম্বর দুপুরে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ধানের শীষের প্রচারণার টমটম ও মাইক ভাংচুর করা হয়। তারও পরদিন ১৩ ডিসেম্বর চকরিয়া পৌরসভার বায়তুশ শরফ সড়কে সাবেক পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, জুয়েল (২৮), জসিম উদ্দিন (৩০) ও আমির হামজাসহ (২৮) অন্তত ৫ জন বিএনপি নেতা-কর্মী আহত হন। একইদিন বিকাল ৩টার দিকে চকরিয়ার পালাকাটা এলাকার ছাত্রদল নেতা মামুনকে পোষ্টার লাগানোর সময় তাকে মারধর করে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়।

একই দিন বিকেল ৩টার দিকে পালাকাটার বুড়ি পুকুর এলাকার বিএনপি নেতা বজল কবির মেম্বারের ছেলে আরমানকে মারধর করা হয়। এছাড়াও তার বড় ছেলে এহসানের বাড়িতেও সন্ত্রাসিরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।

১৩ ডিসেম্বর আরও বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটায় আওয়ামী লীগ। এদিন কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকতের নেতৃত্বে উত্তর লুটুনিতে নির্বাচনী প্রচারণার ২টি মাইক ও টমটম ভাংচুর করা হয়। এতে আহত হন শাহ আলমের ছেলে আবু মুছা ও দেলোয়ারের ছেলে মো. শাকিল।

এদিনই রাত ৮টার দিকে কৈয়ারবিল মন্ডল পাড়ায় নৌকার প্রার্থী জাফর আলমের নেতৃত্বে প্রচারণার মাইকিংয়ের টমটম গাড়ি ভাংচুর করে এবং মাইক দুইটি নিয়ে যায়। ওই সময় কৈয়ারবিল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জিল্লুল করিমের ছেলে রিমনকে বেধড়ক মারধর করে গুরতর জখম করা হয়। কৈয়ারবিল ফণিœর হাঁটখোলায় নৌকার প্রার্থী জাফরের নেতৃত্বে বিএনপির নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে মালপত্র নিয়ে যায় হামলাকারিরা।

ওইদিন আওয়ামী লীগের হামলায় আহত সাবেক মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দারকে হাসপাতালে দেখে অভিযোগ জানাতে চকরিয়া থানায় গিয়েছিলেন ধানের শীষের প্রার্থী হাসিনা আহমদ। ওই সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফর আলমের নেতৃত্বে থানা গেইটের সামনে অবস্থানরত বিএনপি নেতা-কর্মীদের গুলিবর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনায় হাসিনা আহমদ থানার ভেতরে ‘অবরুদ্ধ’ হয়ে পড়েন।

১৩ ডিসেম্বর রাতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা নিজেদের নির্বাচনী কার্যালয় জ¦ালিয়ে দিয়ে পরদিন ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির ৪৩ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। চকরিয়া থানার ওই মামলায় রেজাউল করিম নামের একজনকে বাদী করা হয়।

১৫ ডিসেম্বর ডুলাহাজারা ইউনিয়নের কাটাখালী এলাকায় হাসিনা আহমদ গণসংযোগে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা তাঁর গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে হাসিনা আহমদের গাড়িসহ ৪টি গাড়ি ভাংচুর ও দুইটি মোটর সাইকেল ছিনিয়ে নেয়া হয়।

১৬ ডিসেম্বর ইলিশিয়া ইউনিয়নের ইলিশিয়া-ডেমুশিয়া সড়কে হাসিনা আহমদের পূর্বনির্ধারিত গণসংযোগে যোগ দিতে জড়ো হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর আওয়ামী লীগ নেতা রুস্তমের নেতৃত্বে হামলা ও গুলিবর্ষণ করা হয়। ওই ঘটনায় উল্টো বিএনপির ৫৮ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করে চকরিয়া থানায় আরও একটি মামলা করা হয়।

এই ঘটনার পর হাসিনা আহমদের গণসংযোগ ও পথসভার কর্মসূচি নিরাপত্তাজনিত কারণে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় বিএনপি। পরে পুলিশী নিরাপত্তা চেয়ে সরকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন করলে পুলিশের দেয়া পরামর্শ মতোই ১৯ ডিসেম্বর চকরিয়ার চিরিঙ্গা ইউনিয়নে হাসিনা আহমদের গণসংযোগের কর্মসূচি দেয়া হয়।

কিন্তু যে দিন কর্মসূচি ঠিক করা হয় সেদিন রাতেই পুলিশ চিরিঙ্গা ইউনিয়নে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশির নামে হয়রানি করে পুলিশ। ওই সময় চকরিয়া উপজেলা যুবদল সভাপতি ইব্রাহিম খলিল কাকনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

১৯ ডিসেম্বর বেলা দুইটায় গণসংযোগের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি থাকলেও বেলা দুইটা ১৫ মিনিটে ওই ইউনিয়নে জড়ো হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে চিরিঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল হাফেজ এমইউপি ও ৩নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি নুরুল আবছারকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এই ঘটনায়ও উল্টো বিএনপি নেতা-কর্মীদের আসামি করে মামলা করা হয়।

২০ ডিসেম্বর বরইতলী ইউনিয়নের বানিয়ারছরা সড়কে পহরচাদা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা কালা নজরুলের ক্যাডাররা টমটম গাড়ী জ্বালিয়ে দিয়ে চেয়ারম্যান জালাল আহমদসহ ৫১ জন বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে শওকত ওসমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।

একইদিন হারবাং ইউনিয়নের পহরচাদায় ধানের শীষের প্রচারণা মাইক ও গাড়ি ভাংচুর এবং ড্রাইভারকে মারধর করে আওয়ামী লীগ নেতা তাম্বুল, নুর মোহাম্¥দ, ফরিদুল আলম ও মহিউদ্দিন।

এদিন সন্ধ্যে সাড়ে ৭টার দিকে চোয়ারফাঁড়ি ষ্টেশনে মোকাদ্দেছের অফিসের সামনে নৌকার প্রার্থী জাফরের নেতৃত্বে টমটম গাড়ীর ব্যাটারি ও মাইক ভাংচুর করা হয়। শান্তি বাজার এলাকার বরইতলী ৬নং ওয়ার্ডের ধানের শীষের অফিস ভাংচুর করে আওয়ামী লীগের চকরিয়া উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম ওরফে কালা নজরুলের নেতৃত্বে।

একইদিন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফরের নেতৃত্বে সাহারবিল মাইজ পাড়ায় ধানের শীষ প্রতীকের অফিস ভাংচুর করা হয়।

২১ ডিসেম্বর খুটাখালীতে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা নিজেদের অফিসে নিজেরাই আগুন দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। চকরিয়া থানা পুলিশ ওই মামলা রেকর্ড করে।

পেকুয়া উপজেলা :

নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর চকরিয়ার পাশাপাশি পেকুয়া উপজেলায়ও সমানতালে হামলা-মামলা হতে শুরু করে। ১৪ ডিসেম্বর বারবাকিয়া বাজারের নেজাম উদ্দিনের মোবাইল দোকানের সামনে ধানের শীষের পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলা হয় আওয়ামী লীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান ওয়ারেচী ও জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ডাকাত জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে।

একইদিন রাজাখালী ইউনিয়নের মাতবর পাড়া হাজী মার্কেটে ১নং ওয়ার্ড যুবদলের প্রচার সম্পাদক হারুনুর রশিদের উপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।

এদিন মগনামা কইড়া বাজারে নির্বাচনী মাইকিং করার সময় ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি পারভেজ মোশাররফের উপর আওয়ামী লীগ সমর্থক কইড়া বাজারের নুরু কাদেরের ছেলে শওকত হামলা করে।

১৫ ডিসেম্বর রাজাখালী ইউনিয়নের সবুজ বাজারে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের হামলায় ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন আহত হন। শিলখালী হাজীর ঘোনা এলাকায় শাহাব উদ্দিনের (৮নং ওয়ার্ডের বিএনপি সাধারণ সম্পাদক) দোকানে লাগানো ধানের শীষের পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলে আওয়ামী লীগ সমর্থক মনিরুল ইসলাম।

১৬ ডিসেম্বর সকালে জেলা শ্রমিক দলের সদস্য মিজানকে ধানের শীষের পক্ষে কাজ না করতে হুমকি দেয়া হয়। পরে কাশেমের ভাই ইকবালকে বাড়িতে খুঁজতে গিয়ে না পেয়ে মিজানের ভাই ফারুখকে মারধর করা হয়। পেকুয়া সদরের মৌলভী পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে।

২০ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে উজানটিয়া হোয়াইক্কা মার্কেট এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে উজানটিয়া যুবদলের সেক্রেটারি নাছিরসহ নেতা-কর্মীদের ধানের শীষের প্রচারণায় বাধা প্রদান করা হয়। ওই সময় ধানের শীষের পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়।

এদিন সোনালী বাজার যুবদল নেতা ইলিয়াছ ধানের শীষের পোষ্টার লাগানোর সময় যুবলীগ নেতা তৈয়বের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাকে আহত করে। পরে উল্টো ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম চৌধুরী মিন্টুসহ ২৫ বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। পেকুয়া থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে।

২১ ডিসেম্বর বারবাকিয়া ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা বিএনপির প্রচারণায় বাধা দিয়ে হামলা চালায়। এতে আহত হন বারবাকিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল, যুবদল নেতা সাকিল সিকদার, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফিরোজ আহমদ, মঈন উদ্দিন, গোলাম কাদের, তারেক, আজিজ, আবুবকর সিদ্দিক। এই হামলায় অংশ নেয় পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে নাছির উদ্দিন মিয়া এমইউপি, মহিউদ্দিন, মাহাবু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামা, সেক্রেটারী কামাল, ইদ্রিস, পেকুয়া সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আজম খান, ৮নং ওয়ার্ডের রিদুয়ানসহ ১৫/২০ জন।

হামলাকারিরা ওই সময় গুলিবর্ষণ করে। তবে এই ঘটনায়ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

একইদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে পেকুয়া টইটং হাজীর বাজার আওয়ামী লীগ অফিসে নিজেরা আগুন দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এই ঘটনায়ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানতে পেরেছে বিএনপি।

এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে মো. হোসেন নামের একজন পাগল দা নিয়ে পাগলামি করে অফিসে ঢুকে পড়ে। এই ঘটনায় সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পেকুয়া বাজারে বিএনপির বিরুদ্ধে অশালীন স্লোগান দিয়ে মিছিল বের করে। পরে সেই রাতেই নিজেরা নিজেদের কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ফায়ার সার্ভিসকে দিয়ে আগুন নেভানোর নাটক সাজানো হয় এবং ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।

এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এক অপ্রকৃতস্থ (পাগল) লোককে প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়াও এই মামলায় পেকুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ ও পেকুয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু এবং পেকুয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি মো. ছফওয়ানুল করিমসহ ৭ জনকে আসামি করা হয়।

একই রাতে মগনামা বাইন্যাঘোনা আওয়ামী লীগ অফিসে নিজেরাই আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এই ঘটনায় উল্টো বিএনপির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সেই রাতে উজানটিয়া ইউনিয়নের মধ্যম উজানটিয়া ও পশ্চিম উজানটিয়া আওয়ামী লীগ অফিস নিজেরা আগুন দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

২২ ডিসেম্বর সকালে উজানটিয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বিএনপির পোষ্টার ব্যানার ছিঁড়ার মহড়া দিচ্ছে তারা।

এদিকে চকরিয়া-পেকুয়া আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হাসিনা আহমদ রোববার (২৩ ডিসেম্বর) বিকালে একদল ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

হাসিনা আহমদ বলেন, ব্যক্তিগত ও নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতার কারণে ৭ দিন ধরে নির্বাচনী প্রচারণায় বের হতে পারছি না।

তিনি প্রশ্ন তুলেন, আমি কী বাংলাদেশের নাগরিক নই? সরকারি দলের প্রার্থী পুলিশ পাহারায় বীরদর্পে প্রচারণা চালাবেন, আর আমি প্রচারণায় বেরই হতে পারবো না, এটি কেমন আইন?

তিনি এসব ঘটনা তুলে ধরে নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এভাবে চললে তো নির্বাচনী লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হওয়ার কোন সুযোগ নেই।

হাসিনা আহমদ বলেন, আমরা নির্বাচনের সুষ্টু পরিবেশ চাই। আমরা সাধারণ ভোটারদের নিরাপত্তা চাই। সাধারণ মানুষের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার পরিবেশ চাই। একই সাথে সেনাবাহিনী কার্যকর ভূমিকা চাই।

তিনি নির্বাচন কমিশন, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টিআকর্ষণ করেন।

পাঠকের মতামত: